নামাজের নিয়ত
নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয়?নামাজে নিয়ত করার জন্য বিভিন্ন বইয়ে আরবিতে কিছু নির্দিষ্ট দোয়া দেয়া থাকে ।যেমনঃ নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা'য়ালা..... আরবিতে নামাজের এই নিয়তসমূহ হাদীসের কোন কিতাবে পাওয়া যায়নি। নিয়ত বলতে মূলত মনের ইরাদা বা ইচ্চাকে বুঝায়।মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করার প্রয়োজন নেই।
তাছাড়া নিজ ভাষায় নিয়ত করার মাধ্যমেই নিয়তের উদ্দেশ্য পূরণ হয়। তাই নামাজের নিয়ত নিজ ভাষায় করাই উত্তম।যেমনঃ আমি ফজর/যোহর/আসর/মাগরিব/এশার দুই/তিন/চার রাকাত ফরজ/সুন্নত/নফল নামাজ পড়ছি।
তাকবীরে তাহরীমা
হযরত আয়িশা (রা) হতে বরণিত,তিনি বলেন, রাসূল (স) তাকবীরে তাহরীমার মাধ্যমে নামাজ শুরু করতেন এবং সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করতেন।
নামাজের তাকবীরেঃ اَللَّهُ اَكْبَرُ
অর্থঃ আল্লাহ তা'য়ালা সবচেয়ে বড়।
ছানা
হযরত আয়িশা (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (স) যখন নামায শুরু করতেন তখন বলতেন,(namazer sana bangla)
ছানাঃ سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَا رَكَ اسْمُكَ وَتَعٰلٰى جَدُّكَ وَ لَاۤ اِلٰهَ غَيْرُكَ
অর্থঃ হে আল্লাহ আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি তোমার প্রশংসার সহিত।বরকতময় তোমার নাম,সুউচ্চ তোমার মহিমা, এবং তুমি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নাই।
তা'উজ
তা'উজঃ اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ
অর্থঃ আমি বিতারিত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
তাসমিয়াহ
তাসমিয়াহঃ بِسْمِ اللَّٰهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
অর্থঃ পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ তা'য়ালার নামে শুরু করছি।
রুকুর তাসবীহ
রুকুর তাসবীহঃ سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ
অর্থঃ আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
হযরত হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রা) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহু (স) কে রুকু করার সময় তিনবার “سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ” এবং সিজদা করার সময় তিনবার “سُبْحَانَ رَبِّيَ الْاَ عْلٰى” বলতে শুনেছেন।
রুকু থেকে উঠার সময়ঃ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ
অর্থঃ যে আল্লাহ তা'য়ালার প্রশংসা করেছে আল্লাহ তার প্রশংসা কবুল করেছেন।
রুকু থেকে উঠার পরঃ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ
অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক সকল প্রশংসা তোমারই।
সহীহ বুখারী (৭৩৪), হযরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে সহীহ বুখারীর (৭৮৯) নং হাদীসের শব্দ হচ্ছে, ‘রাব্বানা লাকাল হামদ।’ একই সাহাবী থেকে সহীহ বুখারীর (৭৯৬) নং হাদীসের শব্দ হচ্ছে, ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা লাকাল হামদ।’ আর সহীহ বুখারীর (৭৯৫) নং হাদীসের শব্দ হচ্ছে, ‘আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়ালাকাল হামদ।’ হাফেজ ইবনে হাজার (র) (সহীহ বুখারীর ৭৯৫ নং হাদীসের অধীনে) বলেন, ‘আল্লাহুম্মা’ সহ অগ্রগণ্য তবে ‘আল্লাহুম্মা’সহ এবং ‘আল্লাহুম্মা’ ছাড়া উভয়টিই জায়েয। এরপর ইমাম নববী (র) এর সূত্রে উদ্ধৃত করেন, ‘লাকাল হামদ’ এবং ‘ওয়ালাকাল হামদ’ দুটোই সমান।’ আর ইবনু দাকীকিল ঈদ (র) এর সূত্রে ‘ওয়ালাকাল হামদ’ এর কিছু অগ্রগণ্যতা উল্লেখ করেছেন। মোটকথা সব রকমেই পড়া বৈধ; তবে ‘আল্লাহুম্মা’ এবং ‘ওয়াও’-সহ পড়া বেশি উত্তম।
সিজদার তাসবীহ
সিজদার তাসবীহঃ سُبْحَانَ رَبِّيَ الْاَ عْلٰى
অর্থঃ আমার সুমহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
হযরত হুযাইফা ইবনে ইয়ামান (রা) হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহু (স) কে রুকু করার সময় তিনবার “
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ” এবং সিজদা করার সময় তিনবার “
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْاَ عْلٰى” বলতে শুনেছেন।
দুই সিজদার মাঝে
দুই সিজদার মাঝে পড়ার দু‘আঃ رَبِّ اغْفِرْ لِيْ / اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ
অর্থঃ হে আমার রব্ব! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন / হে আল্লাহ আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
হযরত হুযাইফা (রা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহু (স) (রাতের নামাযে/ তাহাজ্জুদে) দুই সিজদার মাঝে (এই দু‘আ) পড়তেন।رَبِّ اغْفِرْ لِيْ / اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ
হজরত ইবনে আব্বার (রা) বলেন, রাসূল (স) দুই সিজদার মাঝে বলতেন,
اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ
অর্থঃ হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।
তাশাহুদ
তাশাহুদঃ
اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوَاتُ
وَالطَّيِّبَاتُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَ يُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ
اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَ عَلٰى عِبَادِ اللهِ
الصَّالِحِيْنَ اَشْهَدُ اَنْ لَّاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ
مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ
অর্থঃ সমুদয় মৌখিক, শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক উপাসনা আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। হে নবী! আপনার প্রতি আল্লাহর অসীম অনুগ্রহ ও শান্তি বর্ষিত হোক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহর নেক বান্দাগণের প্রতি তাঁর মহাশান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্যদান করছি যে, নিশ্চয়ই হযরত মুহাম্মদ (স) তাঁর দাস ও প্রেরিত রাসূল।(tashahhud bangla)
দুরূদ শরীফ
দুরূদ শরীফঃ
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰ لِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰ لِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ * وَّعَلٰى اٰ لِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَا رَكْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
অর্থঃ হে আল্লাহ! হযরত মুহাম্মদ (স) ও তাঁর বংশধরগণের প্রতি অনুগ্রহ ও মহাশান্তি বর্ষণ করো, যেরূপ হযরত ইব্রাহীম (আ) ও তাঁর বংশধরগণের প্রতি অনুগ্রহ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসা ও সম্মানের অধিকারী।
হে আল্লাহ তা'আলা! হযরত মুহাম্মদ (স) ও তাঁর বংশধরগণের প্রতি বরকত দান করো, যেরূপ হযরত ইব্রাহীম ও তাঁর বংশধরগণের প্রতি বরকত দান করেছ। নিশ্চয়! তুমি প্রশংসা ও সম্মানের অধিকারী বা যোগ্য।(durood sharif bangla)
দু‘আয়ে মাসুরা
দু‘আয়ে মাসুরাঃ
اَللّٰهُمَّ اِنيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اَ نْتَ فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِيْ اِنَّكَ اَ نْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আমার আত্নার ওপর অত্যধিক যুলুম করেছি। তুমি ছাড়া ক্ষমা করার আর কেউ নেই। তুুুুমি নিজ গুনে আমাকে ক্ষমা করো। তুমি আমাকে রহম করো। নিশ্চয়ই তুমি অতীব দয়ালু।(dua masura bangla)
দু‘আয়ে কুনূত
দু‘আয়ে কুনূতঃ
اَللّٰهُمَّ اِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ. وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ .وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلَا نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ اَللّٰهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَ اِلَيْكَ نَسْعٰی وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشٰی عَذَا بَكَ اِنَّ عَذَا بَكَ بِا لْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট সাহায্য চাইছি ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি। তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছি ও তোমারই ওপর নির্ভর করছি। আমরা তোমারই নিকট কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি, তোমাকে অস্বীকার করছি না। যারা তোমার অবাধ্য আমরা তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট ও তাদের থেকে দূরে থাকছি। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই ইবাদত করছি, তোমারই উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করছি। তোমাকেই সিজদা করছি, তোমারই ইবাদতের জন্য চেষ্টা করছি। তোমারই কৃপা ভিক্ষা এবং তোমারই শক্তির ভয় করছি। অবশ্যই কাফিরগণ তোমার শাস্তি ভোগ করবে।(dua qunoot bangla)
সালাম
সালামঃ ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ
অর্থঃ তোমাদের ওপর আল্লাহর শান্তি এবং রহমত বর্ষিত হোক।
0 Comments