কুরআনুল কারিমে দুই প্রকারের হামযাহ দেখা যায়। যথাঃ (ء) , (ا)
এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এটি (ا) কিভাবে হামযাহ হবে- এটিতো আলিফ (ا)। জেনে রাখা ভালো, আলিফের উপর যখন কোনো হরকত চলে আসে [যেমনঃযবর ( َ ),যের ( ِ ),পেশ ( ُ )] তখন সেটি আর আলিফ থাকে না বরং হামযাহ হয়ে যায়।
হামযাতুল ওয়াসল কি ?
ওয়াসল বলতে সংযুক্ত করা বা মিলানো কে বুঝায়।কাজেই সংযোগকারী হামযাহ কে হামযাতুল ওয়াসল বলে। একটি উদাহরণের সাহায্যে দেখা যাক-
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ★الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ
এখানে সূরা ফাতিহার প্রথম দুই আয়াত দেয়া আছে। যদি প্রথম আয়াতে ওয়াক্বফ করা হয় তাহলে দ্বিতীয় আয়াতটি শুরু হবে "আর রহমানির রহিম" দিয়ে।কিন্তু যদি ওয়াক্বফ করা না হয় তাহলে হবে ".....আ'লামীনার রহমানির রহিম"। এই যে মিলিয়ে বা সংযুক্ত করে পড়া হয়েছে এটাকেই ওয়াসল বলে।
হামযাতুল ওয়াসল চেনার উপায়ঃ
কুরআনুল কারিমে খালি আলিফের ওপর ছোট ছ্বদ(ص) এর মত চিহ্ন যদি দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে এটি হামযাতুল ওয়াসল। তবে আমরা যেই কুরআন পড়ি সেগুলোতে আলিফের ওপর এইরকম চিহ্ন দেয়া থাকে না, এখানে আলিফ খালি থাকে।
হামযাতুল ওয়াসল এর বৈশিষ্ট্য হল এটি সবসময় শব্দের শুরুতে বসে।বাক্যের প্রথমে ছাড়া কাজ করবে না যেরকম ওপরের উদাহরণে দেখানো হয়েছে।
কুরআনুল কারীমে যদি কোনো বাক্য খালি আলিফ দিয়ে শুরু হয় তাহলে ওই আলিফকে হামজাহ বানিয়ে পড়তে হয়।কিন্তু যদি এখানে ওয়াসল করা হয় অর্থাৎ পূর্বের বাক্যের সাথে মিলিয়ে পড়া হয় তাহলে ঐ আলিফকে(ا) আর পড়া লাগে না, এটি হামযাতুল ওয়াসল হয়ে যায়।যেমনঃ
সূরা ফাতিহাঃ اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ
এখানে "রব্বিল আ'লামিন" পড়তে বা (ب) কে লাম (ل) এর সাথে মিলিয়ে পড়তে হয়।এক্ষেত্রে আলিফকে (ا) পড়া হয়নি। এটাই হামযাতুল ওয়াসল অর্থাৎ ওয়াসল বা মিলিয়ে পড়ার সময় এই আলিফকে পড়া যায় না।যদি আলিফ দিয়ে পড়া হতো তাহলে "আল আ'লামীন" পড়তে হতো।
এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে, কুরআনের এই খালি আলিফে কখন যবর,যের বা পেশ হবে?
এক্ষেত্রে তিন ধরনের অবস্থা ঘটতে পারে।যথাঃ
(১) আলিফ বা হামজাহর সাথে লাম থাকলে আলিফে সর্বদা যবর হবে।যেমনঃ
اَلرَّحْمٰنِ | الرَّحْمٰنِ | اَلَّذِيْنَ | الَّذِيْنَ |
اَلْحَمْدُ | الْحَمْدُ | اَلرَّحِیْمِ | الرَّحِیْمِ |
(২) যদি আলিফ দিয়ে শুরু হয় ও পরের অক্ষর লাম না হয়ে অন্য কোনো অক্ষর হয় এবং তার ওপর যদি সাকিন থাকে তাহলে তৃতীয় অক্ষরের হরকত অনুযায়ী পড়তে হবে। এক্ষেত্রে তৃতীয় অক্ষর যবর বা যের হলে খালি আলিফে যের হবে।
اِضْرِبْ | اضْرِبْ | اِذْهَبْ | اذْهَبْ |
اِرْجِعِي | ارْجِعِي | اِتَّبِعُوا | اتَّبِعُوا |
(৩) খালি আলিফ দিয়ে শুরু ও পরের অক্ষর লাম না হয়ে অন্য কোনো অক্ষর হয় এবং তার ওপর সাকিন হয় এবং তৃতীয় অক্ষরে যদি পেশ থাকে তাহলে খালি আলিফে পেশ দিয়ে পড়তে হবে।
اُشْدُد | اشْدُد | اُشْكُرْ | اشْكُرْ |
ব্যতিক্রম
কুরআনুল কারীমে পাঁচটি শব্দ এমন আছে যেগুলোতে হামযাহের নিচে যের আসবে কিন্তু তৃতীয় অক্ষরে পেশ থাকবে।সেগুলো হলো-
امضُو | ائتُوا | ١قضُوا | ابنُوا |
امشُو |
ভিডিও
1 Comments
جزاك الله خيرا
ReplyDeleteবহুদিনের খোঁজা প্রশ্নের উত্তর পেলাম।