(১) কারো পায়ে ধরে সালাম করা যাবে কি?
সালাম হচ্ছে শান্তির প্রতীক। মিরাজের রাতে মহান আল্লাহ তা'আলা রাসূল (র) কে যে সকল বস্তু বা বিষয় উপহার দিয়েছিলেন তার মধ্যে সালাম অন্যতম।
সালাম এর পদ্ধতি হল- যখন একজন মুসলমান অপর একজন মুসলমানের সাথে সাক্ষাত করবে তখন প্রথমে একে অপরকে সালাম বলবে এবং চাইলে তারা একে অপরের হাত মিলিয়ে মুসাফাহা করবে যা সুন্নাত। তাছাড়া চাইলে মুরুব্বিদের হাতে অথবা কপালে চুমু দেওয়ার কথাও হাদিসে এসেছে এবং এগুলো সুন্নাহ সম্মত।
সালামের মাধ্যমে অপর ভাইকে অভিবাদন জানানো জান্নাতীদের কাজ। রাসূল (স) এই কাজটিকে ইসলামের শ্রেষ্ঠ কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আমাদের সমাজে বড়দের সম্মানার্থে তাদের পা ছুঁয়ে সালাম করার একটি প্রচলন রয়েছে। যাকে আসলে ইসলামের পরিভাষায় সালাম বলা হয় না। এটাকে 'কদমবুচি' বলে যা অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
কারো সম্মানার্থে মাথা ঝোঁকানো বা অবনত করাকে আরবিতে 'সিজদা' করা বলে। আর ইসলামে কোন অবস্থাতেই মহান আল্লাহ তা'য়ালা ব্যতীত অন্য কাউকে সিজদা করা বৈধ নয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য হোক বা ইবাদতের উদ্দেশ্যে হোক।
যদি তা ইবাদতের উদ্দেশ্যে হয় তাহলে তা স্পষ্ট শিরক হবে। আর যদি তা সম্মানার্থে করা হয় তাহলে তার অনুমতিও ইসলামে দেয়া হয় নি।
কাজেই মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ি,স্বামী বা অন্য যে কেউ হোক কাউকেই পায়ে ধরে সালাম করা যাবে না।
-----------------------------------------------------------------------
(২) পশ্চিম দিকে পা দিয়ে বসা বা ঘুমানো যাবে কি?
হাদিসে খোলা স্থানে কিবলা সামনে বা পেছনে রেখে পেশাব-পায়খানা করতে নিষেধ করা হয়েছে।কিন্তু কিবলা সামনে রেখে বসা বা ঘুমানো যাবে না- এ নিয়ে কোন দলিল নেই।
কাজেই বিনা দলিলে হালাল-হারাম,নেকি-গুনাহ বা মাকরূহ বলাও গ্রহনযোগ্য নয়।কিন্তু কেউ যদি কিবলাকে অবজ্ঞা করা কিংবা কাবা শরীফের মানহানীর উদ্দেশ্যে এমনটি করে তাহলে তা মারাত্মক গুনাহের কাজ হবে।
যেহেতু কাবা মহান আল্লাহ তা'য়ালার নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্যতম বিশেষ একটি নিদর্শন। আর আল্লাহ তা'য়ালার নিদর্শনসমূহের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেক মানুষের উপর ফরজ।তাই বিনা প্রয়োজনে কিবলার দিকে পা না দেওয়াই ভালো।
-----------------------------------------------------------------------
(৩) কারো শরীরে পা লাগলে তাকে কি সালাম করতে হবে ?
আমাদের সমাজে, যদি কারও শরীরে পা লেগে যায় তাহলে তাকে অসম্মান করা বুঝায়।কাজেই কারো শরীরে যদি পা লাগে এবং তিনি যদি এতে অসম্মানবোধ করেন তাহলে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়া উচিত।কিন্তু তার পায়ে ধরে সালাম করা উচিত নয়।
-----------------------------------------------------------------------
(৪) কিবলার দিকে থুথু ফেলা যাবে কি?
ইসলামে কিবলার দিকে থুথু ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে। রাসূল (স) কিবলার প্রতি আদব প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন,
যে ব্যক্তি কেবলার দিকে কফ ফেলে তার চেহারায় ঐ কফ থাকা অবস্থায় কিয়ামতের দিন সে ব্যক্তিকে পুনরুত্থিত করা হবে।
0 Comments